স্টক নিউজ বিডি অনলাইন ডেস্ক: জিকির হচ্ছে সফলতার সোপান। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর, যেন তোমরা সফল হতে পার।’ (সুরা আনফাল : ৪৫)। জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় আর জিকির বিমুখতায় আল্লাহর সঙ্গে বান্দার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আল্লাহর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া মানব জীবনের বড় ব্যর্থতা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মোমিনরা! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা মুনাফিকুন : ৯)।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজের পরে কয়েকটি কালেমা এমন আছে, যেগুলো পাঠকারী ব্যর্থ হয় না। সে কালেমাগুলো হচ্ছে,
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর
৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’
৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও
৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার।’
(মুসলিম : ১৩৭৭)।
নিম্নে কিছু অল্প কথায় অধিক লাভের জিকির তুলে ধরা হলো
প্রচুর পরিমাণে আসতাগফিরুল্লাহ পাঠ করা
ফজিলত : আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা তওবাকারীকে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : ২২২)।
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন ‘যে ব্যক্তি নিজের জন্য এস্তেগফারকে অপরিহার্য করে নিল, আল্লাহ তায়ালা তাকে যে কোনো সংকটে পথ দেখাবেন। যে কোনো ধরনের পেরেশানি ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।’ (বোখারি : ১১/১০১; মুসলিম : ৪/২০৭৫)।
প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহ্ পাঠ করা
ফজিলত : ১০০০ সওয়াব লেখা হয় এবং ১০০০ গোনাহ মাফ করা হয়। (মুসলিম : ২০৭৩)।
বেশি বেশি ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পাঠ করা
ফজিলত : ‘আলহামদুলিল্লাহ’ মিজানের পাল্লাকে ভারি করে দেয় এবং সর্বোত্তম দোয়া। (তিরমিজি : ৫/৪৬২; ইবনে মাজাহ : ২/১২৪৯)।
বেশি বেশি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করা
ফজিলত : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সর্বোত্তম জিকির। (তিরমিজি : ৫/৪৬২; ইবনে মাজাহ : ২/১২৪৯)।
বেশি বেশি ‘সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর’ পাঠ করা
ফজিলত : ‘সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর’ এই কালেমাগুলো আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় এবং নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন ‘পৃথিবীর সব জিনিসের চেয়ে আমার কাছে অধিক প্রিয়।’ (মুসলিম : ৩/১৬৮৫)।
প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করা
ফজিলত : যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ (সগিরা) গোনাহ থাকলে ও তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। (বোখারি : ৭/১৬৮, মুসলিম : ৪/২০৭১)।
বেশি বেশি ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি সুবহানাল্লিল আজিম’ পাঠ করা
ফজিলত : নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি সুবহানাল্লিল আজিম’ এ কালেমাগুলো জিহ্বায় উচ্চারণে সহজ, মিজানের পাল্লায় ভারি, দয়াময় আল্লাহর কাছে প্রিয়।’ (বোখারি : ৭/১৬৮; মুসলিম : ৪/২০৭২)।
বেশি বেশি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ পাঠ করা
ফজিলত : নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ হচ্ছে জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর মধ্যে একটি গুপ্তধন।’ (বোখারি : ১১/২১৩; মুসলিম : ৪/২০৭৬)।
বেশি বেশি ‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ পাঠ করা
ফজিলত : নবী (সা.) বলেন ‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ এ কালেমাগুলো হচ্ছে‘অবশিষ্ট নেক আমলগুলো’। (আহমাদ : ৫১৩; মাজমাউজ জাওয়াঈদ : ১/২৯৭)।
অধিক পরিমাণে নবীজি মুহাম্মদ (সা.) এর ওপর দরুদ পাঠ করা
(কমপক্ষে সকালে ১০ বার বিকালে ১০ বার)
ফজিলত : নবী (সা.) বলেন ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন।’ অন্যত্র তিনি বলেন ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি সকালে ১০ বার এবং বিকালে ১০ বার দরুদ পাঠ করবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন আমার শাফায়াত পাবে।’ (তাবারানি, মাজময়াউজ জাওয়াঈদ : ১০/১২০; আত-তারগিব ওয়াত তারহিব-১/২৭৩)।
স্টক নিউজ বিডি.কম/এসএম
আরও পড়তে পারেন……