স্টক নিউজ বিডি প্রতিবেদন: প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে মোবাইল ফোনের ব্যবহার। বিশেষত করোনা মহামারিতে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ।
ব্যবহারকারী বাড়লেও মোবাইল অপারেটরদের তরঙ্গ বৃদ্ধি না-পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহক। অপারেটরদের স্পেকট্রামের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যা আগে থেকেই অনেক বেশি, সেখানে সেবার মান নিয়ে প্রশ্নও নতুন নয়-আছে গ্রাহকের অবিরাম অভিযোগ।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার। অথচ এ বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর জন্য নেই পর্যাপ্ত তরঙ্গ।
বিভিন্ন ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দ ছিল ১২৯ দশমিক ২ মেগাহার্টজ, যা ব্যবহারকারীর তুলনায় অপ্রতুল। তরঙ্গ সমস্যা নিরসনে সম্প্রতি ৪ মোবাইল অপারেটরের অংশগ্রহণে নতুন স্পেকট্রাম বরাদ্দের জন্য নিলামের আয়োজন করে বিটিআরসি। বর্তমানে প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম বরাদ্দ রয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যবহারকারীর জন্য।
আর নিলাম শেষে বরাদ্দকৃত তরঙ্গ অনুযায়ী, প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১১ লাখ ৭ হাজারের বেশি। নতুন বরাদ্দের পর বিভিন্ন ব্যান্ডের মোট তরঙ্গ দাঁড়ায় ১৫৬.৬ মেগাহার্টজ। দেশের ৪টি মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় গ্রামীণফোনের কাছে ৯০০, ১৮০০ ও ২১০০ ব্যান্ড মিলিয়ে ৩৭ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম।
সঙ্গে নতুন তরঙ্গসহ মোট ৪৭.৪ মেগাহার্টজ। রবির ছিল ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ মেগাহার্টজ, বাংলালিংকের ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ থেকে এখন ৪০ মেগাহার্টজ এবং টেলিটকের ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ, যা অপরিবর্তিত রয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, গ্রামীণফোনের ১৬ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি গ্রাহক ব্যবহার করেন ১ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম, রবির প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামে গ্রাহক সংখ্যা ১১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি, বাংলালিংকের রয়েছে ৮ লাখ ৯৮ হাজারের বেশি গ্রাহক প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম এবং দেশীয় অপারেটর টেলিটকের ২ লাখ ১৯ হাজারের বেশি গ্রাহকের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই ব্যান্ডের অব্যবহৃত স্পেকট্রামের নিলাম হয়। এতে দেশের ৪টি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানই অংশ নেয়। নিলামে অংশ নিলেও কোনো তরঙ্গ নেয়নি রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক।
বাংলালিংক ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে তরঙ্গ কেনে ৪.৪ মেগাহার্টজ, আর ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে তরঙ্গ কেনে ৫ মেগাহার্টজ। তবে নিলামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন ও রবির মধ্যে। আর লড়াই শেষে জয় হলো গ্রামীণফোনের।
যদিও এ বিজয়ের জন্য তাদের রেকর্ডমূল্য দিতে হয়েছে। ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে শেষ ৯ নম্বর ব্লকে ৫ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গপ্রতি মেগাহার্টজ ৪৬ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারে কিনে নিয়ে গ্রামীণফোনই নিলামের সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ পেয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, নতুন বরাদ্দ পাওয়া এ তরঙ্গ কিছুটা হলেও লাঘব করবে গ্রাহক ভোগান্তি। যদিও অপারেটরদের সদ্য কেনা এ স্পেকট্রাম তাদের নেটওয়ার্কে যুক্ত করে গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছাতে ১ থেকে দেড় মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বরাদ্দপ্রাপ্ত তরঙ্গ নিয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন পুরোপুরি সম্ভব হবে না, তবে অভিযোগ কিছুটা কমে আসবে।
স্টক নিউজ বিডি.কম/ এসআর
আরও পড়ুন……