স্টক নিউজ বিডি অনলাইন ডেস্ক: কেবল সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিই নির্ভুলভাবে তা পালন করতে পারে। যদিও শারীরিকভাবে দুর্বল বা মানুষের জন্য ইসলামে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। তথাপি এবাদতের মৌলিক রূপ বাস্তবায়ন করার সওয়াব অপরিসীম; যা শুধু সুস্বাস্থ্যবান ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব।
ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ পাঁচটি। তন্মধ্যে তিনটিই শারীরিক। যথা-নামাজ, রোজা ও হজ। এ ছাড়া কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত করা, জিহাদে অংশগ্রহণ করা এবং দৈহিক শ্রম বিনিয়োগ করে উপার্জন করা বা কারও উপকার করা সবই শারীরিক সক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
শারীরিক সক্ষমতা ছাড়া এর কোনোটিই বিশুদ্ধতার সঙ্গে পালন করা সম্ভব নয়। এ জন্যই রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেন, নিশ্চয়ই দুর্বল মুমিনের তুলনায় সবল মুমিন অধিক উত্তম এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে অধিক প্রিয় (মুসলিম)।
শারীরিক সুস্থতা নিয়ে আমাদের মাঝে যথেষ্ট অসচেতনতা রয়েছে। সমাজের প্রায় সব বয়স ও শ্রেণি-পেশার লোকজনের মাঝে এ নিয়ে উদাসীনতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হজরত নবী করিম (সা.)-এ আশঙ্কার কথাই উল্লেখ করে বলেছেন, দুটি নেয়ামতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ উদাসীন। তা হলো, সুস্থতা আর অবসর। এ ব্যাপারে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পাঁচটি নেয়ামতের মূল্যায়ন কর, পাঁচটি বিপদ আসার আগে। এক. যৌবনের মূল্যায়ন কর বার্ধক্য আসার আগে।
দুই. সুস্থতার মূল্যায়ন কর, অসুস্থতা আসার আগে। তিন. সম্পদের মূল্যায়ন কর, দারিদ্র্য আসার আগে। চার. অবসরের মূল্যায়ন কর, ব্যস্ততা আসার আগে। পাঁচ. জীবনের মূল্যায়ন কর, মৃত্যু আসার আগে (মুস্তাদরাকে হাকিম)।
ইসলাম হলো সামগ্রিক জীবন বিধান। জীবনের প্রতিটি বাঁক, মোড় ও গলিপথ নিয়ে এখানে বিস্তর আলোচনা রয়েছে। বর্ণিত আছে যথোপযুক্ত দিকনির্দেশনা। যেহেতু ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জগতে সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব প্রশ্নাতীত। সুতরাং এ সম্পর্কেও ইসলামে রয়েছে মৌলিক নির্দেশনা।
বর্ণিত আছে-হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর অবিরত আমলের বর্ণনা শুনে রাসূলে আকরাম (সা.) তাকে বললেন, তুমি কিছু সময় নামাজ পড়। কিছু সময় ঘুমাও। মাঝে মধ্যে রোজা রেখ। মাঝে মধ্যে রেখ না। কেন না তোমার ওপর তোমার দেহের অধিকার রয়েছে। চোখের অধিকার রয়েছে। মেহমানের অধিকার রয়েছে এবং তোমার স্ত্রীর অধিকার রয়েছে (বুখারি)।
ওই হাদিসে দেহের অধিকারের কথা বলে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রতিই গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ থেকেই বোধগম্য হয়, অপরিচ্ছন্ন হলে পরিচ্ছন্ন হতে হবে। দুর্বলতা দেখা দিলে সবল হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পরিমাণমতো ঘুমাতে হবে। অসুখ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্যের জন্য যা যা ক্ষতিকর তা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা আল্লাহর কাছেও অপছন্দনীয়। তিনি বলেন, তোমরা নিজের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ফেল না। অন্যের প্রতিও সদয় হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সদয় লোকদের পছন্দ করেন (সূরা বাকারা-১৯৫)।
লেখক : কালীম মাহফুজ
সৈয়দপুর জামিয়া এমদাদিয়া মাদ্রাসা, সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ
স্টক নিউজ বিডি.কম
আরও খবর পড়ুন……